25 C
Bangladesh
Thursday, March 28, 2024
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়'আয়ের পথ বন্ধ পর্যটন শিল্পের ৪০ লাখ মানুষের' - টোয়াব

‘আয়ের পথ বন্ধ পর্যটন শিল্পের ৪০ লাখ মানুষের’ – টোয়াব

আবুল হোসেন রাজুঃ-
পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত ৪০ লাখ মানুষের মানুষের আয়ের পথ এখন পুরোপুরি অনিশ্চিত।
মানবেতর জীবন যাপন করছে এসব মানুষ, তাদের প্রত্যেকের চোখেই আজ জল।

টোয়াবের দাবি করোনা মহামারির কারণে পর্যটন খাতকে গত বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান গুণতে হয়েছে। এ শিল্পে জড়িত অনেকেই হতাশ হয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) এর সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান এসব কথা বলেন।

সভাপতি বলেন, মহামরি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প। করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প অভ্যন্তরীণ পর্যটনের মাধ্যমে কছুটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছিল কিন্তু করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল।

তিনি বলেন, গতবছর করোনার কারণে পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে শুধু টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ হাজার সাতশত কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে সবকিছু স্থবির হওয়ায় পর্যটন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ছে। যদি এমন পরিস্থিতি এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে থাকে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি হবে।

তিনি আরও বলেন, পর্যটন শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে ট্যুর অপারেটরদের বাঁচাতে পর্যটন কেন্দ্রগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া হোক। কারণ, পর্যটন এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প। বাংলাদেশেও এর বিপরীত নয়। ২০১৯ সালের জিডিপিতে পর্যটন ৪ দশমিক ৪ শতাংশ যোগ করেছিল। আমরা টোয়াবের পক্ষ থেকে গতবছর করোনা মহামারি শুরু থেকেই ট্যুর অপারেটর ও পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত সকলের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে আসছি যা আজও সফলতার মুখ দেখেনি। এমনকি সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্বেও কোন প্রকার ব্যাংক লোন গ্রহণ করতে পারেনি।

টোয়াব সভাপতি বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে এবার ৪ হাজার ৩২ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে, যা আগের বাজেটের চেয়ে ৩৪৪ কোটি বেশি। এই বরাদ্দ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য খুবই যৎসামান্য। অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের কথা বলেছেন কিন্তু, খাতটিকে আর্থিক সংকট থেকে বের করে আনার বিষয়ে কোন প্রকার দিক নির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ট্যুর অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার এর সভাপতি এম রেজাউল করিম রেজা বলেন, দীর্ঘ সময় করোনা মহামারির কারণে সকল পর্যটন শিল্প বন্ধ থাকার পর বর্তমানে যানবাহন, গরুর বাজারসহ সবকিছু খোলা শুধু বন্ধ পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

তিনি বলেন, ১১৯টি উপখাত জড়িত আছে পর্যটন শিল্পের সাথে। যেগুলো আবার জড়িত আছে মন্ত্রণালয়ের সাথে। এক সময় কক্সবাজার মাছ ও কাঠশিল্পের ওপর নির্ভর থাকলেও এখন পুরোপুরি নির্ভর ট্যুরিস্টদের ওপর। ট্যুরিস্টরা কক্সবাজার ভ্রমণে না আসতে পারায় অন্তত ৫০০টির ও বেশি হোটেল আর দেড় হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় মাছ ব্যবসায়ীসহ সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক শ্রমিকরাও ব্যপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এতে করে বর্তমানে যেমন মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছে এর প্রভাব আগামীতেও বহাল থাকবে। তাই অতি দ্রুত পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, মানুষের সুস্থ হওয়ার জায়গা এখন বন্ধ। মানুষ রাতদিন পরিশ্রম করে কাজকর্ম করার পর একটু শান্তি আর বিনোদন এর খোঁজে পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে যায়। পর্যটন কেন্দ্রগুলো মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচতে সাহায্য করে। দীর্ঘ সময় ধরে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকার ফলে মানুষের সুস্থ হওয়ার জায়গা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। দেশের সবকিছু মোটামুটি চলছে পর্যটন কেন্দ্র ব্যতীত। তাই জোর দাবি জানাচ্ছি অতিদ্রুত পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার।

উপস্থিত এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম এর সভাপতি নাদিরা কিরণ বলেন, এখন দেখছি দেশে দুই রকম পন্থা চলছে। একদিকে দোকানপাট, মার্কেট খোলা আর অন্যদিকে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ। এই দুই রকম পন্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বাজেটেও এই সেক্টরের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই। অতিদ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয় তাহলে এই সেক্টরের মানুষগুলো বেঁচে যায়।

উপস্থিত ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন এর সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, সুন্দরবনসহ এই উপকূলীয় এলাকায় ৫২টি লঞ্চ চলাচল করত। কিন্তু পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকার ফলে এগুলো চলাচল করছে না। যার প্রভাব পড়ছে এই অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের ওপর। মোংলার ৪২ হাজার পরিবারকে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। তাই সরকারের প্রতি আবেদন থাকবে যত দ্রুত সম্ভব পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হোক।

কটেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব সাজেক ভ্যালীর উপদেষ্টা মো. মনিরুজ্জামান মাসুদ বলেন, করোনার এই সংকটময় সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই শিল্পের সাথে জড়িত অনেকেরই জীবন চলাচলে ব্যহত হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতি প্রেমিদের সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাজেক। এই সাজেক ভ্যালীতে কটেজ এর সংখ্যা রয়েছে ১০০টির ও বেশি। এখানে কর্মরত ২৫০০ জনের পর্যটন খাত ছাড়া অন্যকোনো আয়ের মাধ্যম নেই। পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকার ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সাজেক ভ্যালীতে বসবাসরত অধিকাংশই আদিবাসী। তাদের এই মাধ্যমে ছাড়া অন্য কোন মাধ্যম নেই। তাই, যদি এখনই পর্যটন কেন্দ্র খুলে না দেয়া হয় তাহলে অনেক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে তাদেরকে।

পর্যটন শিল্পের বরাদ্দ কত টাকা চাচ্ছেন সাংবাদিকদের করা এই প্রশ্নের জবাবে টোয়াব সভাপতি বলেন, পর্যটন শিল্পের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এতে করে এটার ক্ষতি পূরণ করতে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চাচ্ছি। এছা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments