34 C
Bangladesh
Saturday, April 20, 2024
spot_imgspot_img
Homeখেলার মাঠক্রিকেটটেস্ট মর্যাদার পর মানুষটিকে হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ

টেস্ট মর্যাদার পর মানুষটিকে হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল এডি বারলোর। ছিল কত পরিকল্পনা। ক্রিকেট মানচিত্রে সত্যিকারের একটি শক্তি হয়ে উঠতে বাংলাদেশকে কী কী করতে হবে—নিপুণ হাতে সেগুলোর ছক কেটেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই কোচ। কিন্তু টেস্ট মর্যাদার পর সে মানুষটিকেই আর পেল না বাংলাদেশের ক্রিকেট।

বারলো ১৯৯৯ সালে টেস্ট মর্যাদার স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশে এসেছিলেন ‘ডিরেক্টর অব কোচিং’ হয়ে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩০টি টেস্ট খেলেছিলেন এই ক্রিকেটার। ৪৫.৭৪ গড়ে ২ হাজার ৫১৬ রান করা এই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল তাঁর নিজ দেশের বর্ণবাদ নীতির কারণেই। প্রোটিয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটারের হাত দিয়েই আসলে টেস্ট মর্যাদার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটের কাঠামোটা দাঁড়িয়েছেন। আজ দেশের ক্রিকেটের অনেক কিছুই বারলোর মস্তিষ্কপ্রসূত।

২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার সময়ও তিনি সুস্থ ছিলেন। স্বপ্ন দেখছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু অভিষেক টেস্টের ঠিক আগ দিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০০০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ যখন ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলছে, তিনি তখন হুইল চেয়ারে। অসহায় একজন মানুষ। ২০০১ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে না পারার অপূর্ণতা নিয়েই চোখের জলে বিদায় জানান বাংলাদেশকে। ২০০৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর পরলোকগমন করেন তিনি। আমৃত্যু যে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের মঙ্গল কামনা করে গেছেন, সেটি পরে শোনা যায় তাঁর স্ত্রী ক্যালি বারলোর কাছ থেকে।

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার খুব কাছ থেকে দেখেছেন বারলোকে। তাঁর অধীনে নিজেকে তৈরি করেছেন টেস্ট ক্রিকেটের জন্য। বারলোর স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেন না তিনি, ‘এডি বারলোর অসুস্থ হয়ে যাওয়াটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ছিল খুব বড় একটা ধাক্কা। বারলোর অধীনে আমরা যদি খেলতে পারতাম, তাহলে টেস্ট খেলার প্রথম দিকের বাজে সময়টা হতো না। দল নির্বাচন থেকে শুরু করে সবকিছুতে যে অস্থিরতাটা ছিল, সেটা থাকত না। আমাদের ক্রিকেট আজ আরও ভালো জায়গায় থাকতে পারত।’

বাংলাদেশের ক্রিকেটে বারলোর অবদান অস্বীকার করার কোনো উপায়ই নেই , এটা বিশ্বাস করেন হাবিবুল, ‘আজ আমাদের ক্রিকেটে যা যা দেখেন, এই যে খেলোয়াড়দের কেন্দ্রীয় চুক্তি, একাডেমি ইত্যাদি সবই বারলোর মস্তিষ্কপ্রসূত। তিনি এসব পরিকল্পনা বিসিবিকে দিয়ে গিয়েছিলেন। সেভাবেই ক্রিকেট এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও কিছু দিন থাকলে আমাদের ক্রিকেট আরও ভালোভাবে দাঁড়িয়ে যেত। এটা মন থেকে অনুভব করি। অনেক কিছুই করার ছিল বারলোর। তবে যা দিয়ে গেছেন সেটাও কম নয়।’

টেস্ট মর্যাদা পাবার ২০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করছে বাংলাদেশ। এ দিনে এডি বারলোকে স্মরণ না করা বড় অন্যায়ই। তিনি হয়তো কোনো দূরলোক থেকে সাকিব, তামিমদের প্রজন্মকে সব সময়ই শুভ কামনা জানিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্রঃপ্রথম আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments