30 C
Bangladesh
Friday, April 26, 2024
spot_imgspot_img
Homeপর্যটনকুয়াকাটাআগামী কাল থেকে কুয়াকাটা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত ।

আগামী কাল থেকে কুয়াকাটা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত ।

হোসাইন আমির,কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ-
টানা ১৩৯ দিন বন্ধ থাকার পর আগামী ১৯ আগষ্ট কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের দ্বার খুলছে। পহেলা এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকা পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায় সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অবলোকনের সাগর সৈকত কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। আবাসিক হোটেল-মোটেল, রেস্তরাঁ ট্যুরিস্ট বোট গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। কুয়াকাটাকে স্বরূপে ফেরাতে নতুন করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
শুঁটকি ব্যবসায়ী, শামুক-ঝিনুকের দোকানদার, বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফার, মোটরসাইকেল– ভ্যান– অটোচালক, সৈকতের ছাতা-বেঞ্চ ব্যবসায়ী, চা-পানের দোকানদার, চটপটি বিক্রেতা, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটনকেন্দ্রিক সব ব্যবসায়ীরাও নিজ নিজ ব্যবসাকে নতুন করে সাজাতে শুরু করেছেন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন গত ১ এপ্রিল থেকে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে। শুন্য হয়ে পড়ে এখানকার প্রায় দেড়শ আবাসিক হোটেল-মোটেল। বন্ধ হয়ে যায় পর্যটনকেন্দ্রিক সব ব্যবসা-বাণিজ্য। শুন্যতা নেমে আসে কুয়াকাটার ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হেেয়ছে। দেশের সকল সেক্টরে অনুদান থাকলেও এই ট্যুরিজম সেক্টরে কোন অনুদান না থাকায় অসহায় হয়ে পরছেন অনেক ব্যবসায়ীরা।

কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট এলাকার ঝিনুক ব্যবসায়ী নুরজামাল বলেন, ‘এ রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে তা বুঝতে পারিনি। করোনার কারণে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ হলে গত কয়েক মাস ধরে দোকানের মালামাল যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায়ই পড়ে আছে। এখন দোকান নতুন করে সাজাচ্ছি।

খাবার হোটেল রাজধানীর মালিক জয়নাল বলেন, তাঁর হোটেলে দৈনিক ২০-২৫ হাজার টাকার বেচাকেনা হতো। হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মচারীদের ছুটি দিয়েছিলেন। কর্মচারীরা করোনাকালে অন্য কাজে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। এখন হোটেল চালানোর জন্য কর্মচারী সংকটে পড়েছেন। তারপরও ঝাড়ামোছা করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতি‘র সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া জাহিদ বলেন, মহামারিতে আমাদের অনেক লোকসান হয়েছে যার কোন হিসেব নেই মাঝে মাঝে আশার বানী পেয়েও আমরা পাইনি সরকার হতে কোন প্রনোদনার কোন প্যাকেজ সব চেয়ে অসহায় এই সেক্টরটি যার কোন অবিভাবক নাই ।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব (কুটুম) সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বেচাকেনা না থাকায় অনেক মালিককে দোকানপাট ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখন পর্যটনের দ্বার খুলছে শুনে সবাই যে যাঁর মতো করে গুছিয়ে ব্যবসা চাঙা করার পরিকল্পনা করছেন।

কুয়াকাটায় ১৬০টির মতো আবাসিক হোটেল–মোটেল রয়েছে। হোটেল-মেটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, প্রতিটি হোটেলের মালিকই বড় রকমের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। টাকার অঙ্কে হিসাব করলে গত দেড় বছরে হোটেল ব্যবসায় কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রিক সব ব্যবসা মিলিয়ে কমপক্ষে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ‘করোনাকালের পর পর্যটনের দ্বার উম্মুক্ত হলে কুয়াকাটা স্বরূপে ফিরবে, সে আশায় বুক বেঁধে আছি’, জানান তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট ও বিনোদনকেন্দ্র আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে না। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। রাত ৮ পরে সীবিচে কেউ ঘোরাঘুরি করতে পারবে না। এর ব্যত্যয় যাঁরা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments