25 C
Bangladesh
Tuesday, May 7, 2024
spot_imgspot_img
HomeUncategorizedকুলাউড়ায় ধর্ষণের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া: পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন।

কুলাউড়ায় ধর্ষণের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া: পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে একটি ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে, চলছে ছুলছেঁড়া বিশ্লেষন। ঘটনার সুক্ষ্ম তদন্ত ছাড়াই কিভাবে পুলিশ প্রেসব্রিফিং করে এবং ভিকটিমের পূর্ণ পরিচয় প্রকাশ করে। কোথা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে, তা নিয়েও রয়েছে ধূয়াসা। আর এসব বিষয়াদিসহ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় চলছে তুমুল হট্টগোল। ভিকটিমের নানির দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাতে চিনু মিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে থানায় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে প্রেসব্রিফিং করেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালেক। এসময় ওসি ভিকটিমের পুরো নাম-পরিচয় প্রকাশ করে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, তার বাবা চিনু মিয়া ঈদের দিন দিবাগত রাতে তাকে ধর্ষণ করেছেন এবং ২-৩ দিন ঘরের মধ্যে বন্ধি অবস্থায় রেখেছেন। যাতে ঘটনা কেউ জানতে না পারে। পরেরদিন সোমবার রাতে ভিকটিমের নানীর কাছ থেকে খবর পেয়ে চিনু মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে অবস্থা বেগতিক থাকায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, ধর্ষনের ঘটনায় আটক চিনু মিয়া এবং স্ত্রীর আয়শা বেগমের মধ্যে বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য চলছিলো। এনিয়ে জয়চন্ডী ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানগন একাধিকবার সালিশ বৈঠক করে সামাধান করেছেন। কিন্তু এরপরও তাদের ঝগড়া-বিবাদ থামেনি। গেলো ১৩ রমজানে আবারো স্বামীর সাথে ঝগড়া দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান আয়শা বেগম। যাওয়ার সময় আশপাশের মহিলাদের বলে যান, আগামী এক মাসের মধ্যে চিনু মিয়াকে লালঘর দেখাবেন। এরপর ১৮ রমজান স্বামীকে না জানিয়েই মেয়ে দু’টোকে বাপের বাড়ি রেখে প্রবাসে চলে যান আয়শা। হটাৎকরে ২৬ রমজান মেয়ে দুটো (বড় মেয়ে ১২ বছর, ছোট মেয়ে ৮ বছর) বাপের কাছে চলে আসে ঈদ করার জন্য। তোমাদের মা আসেনি কেন? এমন প্রশ্ন করলে ছোট মেয়ে বাবাকে বলে আম্মা বিদেশ চলে গেছেন। ঈদের আগের দিন শুক্রবার চিনু মিয়া মেয়ে দুটোকে নিয়ে শহর থেকে নতুন জামা-কাপড় কিনে আনেন। ঈদের দিন এবং পরের দিন ভিকটিম নতুন জামাকাপড় পড়ে আশপাশের বাড়িতে বেড়াতে গেছে এবং সারাদিন আমোদ ফুর্তি করেছে, রান্না-বান্না করেছে, সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলা করেছে। পরেরদিন রোববার বিকালে মেয়েরা তাদের নানার বাড়ি যেতে চাইলে চিনু মিয়া স্থানীয় একটি অটোরিকশা দিয়ে দুই মেয়েকে তাদের নানার বাড়ি (দানাপুর) দিয়ে আসেন। চিনু মিয়ার ছেলে আগে থেকেই নানার বাড়ি থাকতো। চিনু মিয়া রাগে-অভিমানে দির্ঘদিন থেকে শশুড় বাড়ি যান না। তাহলে পুলিশ কিভাবে ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করলো? এবং দুপুরে করা প্রেসব্রিফিংয়ের ভিডিও “ওসি কুলাউড়া থানা” সাইট থেকে রাতে কেন মুছে ফেলা হলো? এমনসব নানা প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে নেটিজেন ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন মহলের কাছে। এ বিষয়ে জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব মাহাবুব জানান, চিনু মিয়া ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিলো। আমি নিজেও একাধিকবার বিচার বৈঠক করে সমাধান করে দিয়েছি। এরপর হটাৎ রমজানে শুনলাম চিনু মিয়ার স্ত্রী প্রবাসে চলে গেছেন। তবে, আমার বিশ্বাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি বের করে আনবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments